Thursday, October 17, 2024
HomeBlogত্রাণ সচিব – আজকের বাজার

ত্রাণ সচিব – আজকের বাজার


বন্যায় নতুন করে কোনো এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান।
আজ রোববার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের অবহিতকরণ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
কামরুল হাসান বলেন, বিগত ২৪ ঘণ্টায় পূর্বাঞ্চলীয় কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ফেনী জেলার ভারতীয় ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী অঞ্চলে এবং ত্রিপুরা প্রদেশের অভ্যন্তরীণ অববাহিকাসমূহে উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত পরিলক্ষিত হয়নি এবং উজানের নদ-নদীর পানি সমতল হ্রাস অব্যাহত আছে। ফলে বর্তমানে মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ,  ফেনী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চলের বিদ্যমান বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত আছে।
বন্যার সার্বিক অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, বন্যায় দেশের ১১  জেলায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ১০ লাখ ৪৭ হাজার ২৯ পরিবার। আর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন প্রায় ৫২ লাখ মানুষ।
সচিব জানান, ১১টি জেলার ৭৩ উপজেলা ইউনিয়ন-পৌরসভা ৫৪৫ বন্যা প্লাবিত এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মৃতের সংখ্যা ১৮ জন, নিখোঁজ রয়েছেন দুইজন। পানিবন্দি ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৩ হাজার ৬৫৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ৪ লাখ ১৫ হাজার ২৭৩ জন এবং ২২ হাজার ২৯৮টি গবাদি পশুকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। ১১ জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা  সেবা দেওয়ার জন্য ৭৪৮টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে বলেও জানান তিনি।
বন্যা উপদ্রুত এলাকায় সরকারি-বেসরকারিসহ সব পর্যায় থেকে ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত আছে জানিয়ে তিনি বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে বিতরণের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে ১১ জেলায় মোট ৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা, ২০ হাজার ৬৫০ মেট্রিক টন চাল, ১৫ হাজার প্যাকেট শুকনা ও অন্যান্য খাবার, ৩৫ লাখ টাকার শিশুখাদ্য এবং ৩৫ লাখ টাকার গো-খাদ্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দেশের সব জেলায় পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী মজুত রয়েছে।
ত্রাণ সচিব বলেন, বন্যা আক্রান্ত জেলাগুলোর জেলা প্রশাসককে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, মেডিকেল টিম ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সমন্বয় করে একসঙ্গে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
কামরুল হাসান বলেন, ফেনী জেলার ছাগলনাইয়া ও পরশুরাম উপজেলায় সেনাবাহিনীর ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌ ও সড়ক পথে এবং তাদের হেলিকপ্টারসহ বিমানবাহিনী, র‌্যাব ও বিজিবির হেলিকপ্টার যোগে প্রত্যন্ত এলাকায় ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছে। পাশাপাশি উদ্ধার কার্যক্রম চলমান আছে।
ফেনীতে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য ফিল্ড হাসপাতাল প্রস্তুত করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী ও জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসকরা সেবা দিচ্ছেন। পাশাপাশি স্থানীয় ক্লিনিক, হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোকে বন্যার্তদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকরা নির্দেশনা দিচ্ছেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত উপদেষ্টা বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য বন্যা উপদ্রুত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। ফেনী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যোগাযোগের জন্য একটি ভি-সেট চালু করা হয়েছে বলেও জানান ত্রাণ সচিব।
তিনি বলেন, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতন হতে হবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। (বাসস)



RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments